নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনের মামলায় শোকজের জবাব না দিয়ে পাঁচলাইশ থানার ওসি মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন ও এসআই আব্দুল আজিজ নিরুদ্দেশ। এক মাসের বেশি সময় ওসি ছাড়াই চলছে থানার কার্যক্রম। গতকাল সোমবার চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ বেগম জেবুন্নেছার আদালতে শুনানিতে ভুক্তভোগী সৈয়দ মো. মুনতাকিম ওরফে মোস্তাকিমের আইনজীবী এসব বিষয় বিচারকের নজরে আনেন।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কিডনি ডায়ালাইসিসের বর্ধিত ফি কমানোর আন্দোলন থেকে আটক মোস্তাকিমকে নির্যাতনের অভিযোগে পাঁচলাইশ থানার ওসিসহ দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়। সেই মামলায় আসামিদের শোকজ করার পরও তারা কোনো জবাব দেননি।
এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট জিয়া হাবীব আহসান বলেন, সিআইডির তদন্ত রিপোর্ট সূত্রে জানতে পারি, পাঁচলাইশ মডেল থানার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ থানার ওসি চার দিনের ছুটিতে গিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করছেন না। আদালতের আদেশ অমান্য করায় তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করেছি।
ওই মামলার তদন্ত করেন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (চট্টগ্রাম জেলা ও মেট্রো) মুহাম্মদ শাহনেওয়াজ খালেদ। তদন্ত রিপোর্টে তিনি উল্লেখ করেন, গত ২২ ফেব্রুয়ারি মামলার বিবাদী পাঁচলাইশ থানার ওসি মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন ও এসআই আব্দুল আজিজকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়। ৬ মার্চ নোটিশের বিপরীতে ফিরতি বার্তা আসে। এতে জানানো হয়, গত ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ছুটিতে থাকা অবস্থায় অসুস্থতার কারণে ওসি মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন এখনো কর্মস্থলে আসেননি। অন্যদিকে এসআই আব্দুল আজিজ ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে শারীরিক অসুস্থতার কারণে বিশ্রামে গিয়ে কর্মস্থলে গরহাজির।
ওসি মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের সন্ধানে পাঁচলাইশ থানায় যোগাযোগ করা হলে ডিউটি অফিসার এসআই মুনিরা বলেন, অনেক দিন ধরে শারীরিকভাবে অসুস্থতার কারণে তিনি ছুটিতে রয়েছেন।
১০ জানুয়ারি ডায়ালাইসিসের বর্ধিত ফি কমানোর দাবিতে আন্দোলনরতদের ওপর চড়াও হন ওসি নাজিম উদ্দিনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ। এ সময় মোস্তাকিমকে আটক করে একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ঢুকিয়ে মারধর করেন ওসি নাজিম। থানায় নিয়ে তাকে আবারও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। পরে ২০ ফেব্রুয়ারি পাঁচলাইশ থানার ওসি মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন ও এসআই আব্দুল আজিজকে বিবাদী করে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে আদালতে মামলা করেন মোস্তাকিম।