সেন্ট্রিফিউগাল পাম্প। কৃষিতে সেচ, বাসা-বাড়ি, অফিস-আদালতে পানি উত্তোলনের কাজে ব্যবহার হয় যন্ত্রটি। এক সময় বিদেশ নির্ভরতা থাকলেও এখন তৈরি হচ্ছে দেশেই। দেশের গন্ডি পেরিয়ে পাশের দেশ ভারতেও বেশ শক্ত অবস্থান করে নিয়েছে উত্তরের শিল্প শহর বগুড়ায় উৎপাদিত এই পাম্প।
বগুড়া থেকে ‘পানি তোলার পাম্প’ ভারতে রপ্তানি করে গেলো পাঁচ বছরে দেশে এসেছে ৯ লাখ ৬১ হাজার ডলার। অথচ এমন সম্ভাবনাময় শিল্পটি ভুগছে জ্বালানি ও কাঁচামাল সংকটে। ‘পাম্প’ রপ্তানির ধারবাহিকতা ধরে রাখতে ভর্তুকিসহ সরকারের নজরদারি বাড়ানোর দাবি ব্যবসায়ীদের।
২০১৮ থেকে ২২ সাল পর্যন্ত, পাঁচ বছরে মিলটন, রনি, মাইশা ও আজাদ ইঞ্জিনিয়ারিং বগুড়া থেকে ভারতে রপ্তানি করেছে ৯ লাখ ৬১ হাজার ৬৩৭ ডলারের সেন্ট্রিফিউগাল পাম্প। এবার জ্বালানি আর কাঁচামালের চোখ রাঙানি বেকায়দায় ফেলেছে উদ্যোক্তাদের।
বগুড়া বিসিক শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি আজিজার রহমান মিলটন বলেন, আমাদের কাঁচামালের সংকট। যেমন, জাহাজের স্ক্রাপ আমাদের প্রয়োজন, আমরা সেটা পাচ্ছিনা। ফ্যাক্টরি চালানোর জন্য আমরা এলসির মাধ্যমে বিদেশ থেকে মালগুলো নিয়ে আসবো কিন্তু এলসি করতে পারছি না। এই প্রতিষ্ঠান আমরা কতদিন ধরে রাখতে পারবো আমরা সেই সংঙ্কায় আছি।
উদ্যোক্তারা জানান, এক বছর আগেও যেখানে ২৮ হাজার টাকায় মিলতো প্রতিটন স্ক্রাপ, সেখানে এখন গুণতে হচ্ছে ৭০ হাজার টাকা। ৩১ হাজার টাকার হার্ডকোক বিক্রি হচ্ছে ৭৫ হাজারে। আর ৫২ হাজার থেকে পিগ আয়রনের টন হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। সেইসঙ্গে সিলিকন ও ম্যাঙ্গানিজের দামও হয়েছে দ্বিগুণ। এমন অবস্থায় সম্ভাবনাময় এই রপ্তানিখাতের সাফল্য ধরে ভর্তুকির দাবি ব্যবসায়ীদের। বলছেন, স্বাভাবিক রাখতে হবে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস-বিদ্যুৎ সরবরাহ।
ফোরাম অব এগ্রো মেশিনারী ম্যানুফাকচারিং এন্ড প্রসেসিং জোনের সভাপতি গোলাম আযম টিকুল বলেন, আমাদের যে কাঁচামাল গুলো আছে বিশেষ করে পিগ আয়রন এবং স্ক্রাব এই দুটোতে যদি সরকার আমাদেরকে ভর্তুকি দেয় তাহলে এর মূল্যমান ঠিক রাখা যাবে।
আল মদিনা মেটাল ওয়ার্কর্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মোক্তাদির অলি বলেন, সরকার যদি এখানে নজরদারি করতেন তাহলে প্রত্যেকদিন পণ্যের দাম বাড়ত না। আজকে যদি আমরা কিনি ১০০ টাকায়, কালকে ১০২ টাকা, পরশুদিন ১০৪ টাকা।
বগুড়া চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মাসুদুর রহমান মিলন বলেন, নিরবিচ্ছিন্ন গ্যাস, বিদ্যুৎ সুবিধা এবং ব্যাংক ঋণ নিয়ে যেন আমরা কাজ করে সেটি আবার সঠিক সময়ের মধ্যে ফেরত দিতে পারি সে ব্যবস্থা গুলো করতে হবে।
বগুড়া থেকে ভারতে সেন্ট্রিফিউগাল পাম্প রপ্তানি করে ২০১৮ সালে ২ লাখ ৭৬ হাজার ৪০০ ডলার, ১৯ এ ১ লাখ ৭৯ হাজার ৫৮০ ডলার, পরের বছর ১ লাখ ৫৯ হাজার ৩১০ ডলার, ২০২১ সালে ১ লাখ ৯ হাজার ৯৬০ ডলার এবং ২০২২ সালে আয় হয় ২ লখ ৩৬ হাজার ৩৮৭ ডলার।