ঢাকা ০২:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শুদ্ধভাবে জাতীয় সংগীত গাইতে পারেননি কর্মকর্তা

শিক্ষা অফিসারকে শোকজ

  • অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৬:২২:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩
  • ১৬৬৪ বার পড়া হয়েছে

শুদ্ধ ও সঠিকভাবে জাতীয় সংগীত গাইতে না পারায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার প্রাচীন বিদ্যাপীঠ মোগড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শরীর চর্চা বিভাগের শিক্ষক সোহরাব হোসেনকে শোকজ করেছেন জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম।

মঙ্গলবার দুপুরে তিনি বিদ্যালয়টি পরিদর্শনকালে এই শোকজ করেন। এ সময় বিদ্যালয় সম্পর্কে খোঁজ খবর না রাখা এবং প্রশাসকের পরিদর্শনকালে অনুপস্থিত থাকায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবুল হোসেনকেও শোকজ করেন।

এ ব্যাপারে মোগড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শশাঙ্ক রায় চৌধুরী জানান, জেলা প্রশাসক স্যার হঠাৎ করেই বিদ্যালয়ে প্রবেশ করেছেন। এ সময় তিনি বিদ্যালয়ের মাঠে শরীর চর্চা বিভাগের শিক্ষক সোহরাব হোসেন স্যারকে পেয়ে তার নাম পরিচয় জিজ্ঞাসা করেন। এক পর্যায়ে তাকে শুদ্ধভাবে জাতীয় সংগীত গাইতে বলেন। সম্ভবত তিনি অপ্রস্তুত হয়ে যাওয়ার কারণে সঠিকভাবে জাতীয় সংগীত গাইতে পারছিলেন না। এ সময় ডিসি স্যার তাকে প্রশ্ন করেন, আপনি সঠিক ভাবে জাতীয় সংগীত গাইতে না পারলে শিক্ষার্থীদের কিভাবে শেখাবেন?

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী ও মোগড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শরীর চর্চা বিভাগের শিক্ষক সোহরাব হোসেন জানান, জেলা প্রশাসক স্যার হঠাৎ করে মাঠে প্রবেশ করেন। এ সময় তিনি বিদ্যালয়ের মাঠে গোচারণ দেখে কিছুটা অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এক পর্যায়ে আমাকে ডেকে নেন এবং আমার নাম পরিচয় জানতে চান। নাম পরিচয় দেয়ার পর ডিসি স্যার আমাকে জাতীয় সংগীত শুদ্ধভাবে গাইতে বলেন। কিন্তু আমি অপ্রস্তুত হয়ে পড়ি। যার কারণে সঠিকভাবে জাতীয় গাইতে পারছিলাম না। তাই ডিসি স্যার আমার কাছে কারণ জানতে চেয়েছেন কেনো শুদ্ধ এবং সঠিকভাবে জাতীয় সংগীত গাইতে পারিনি।
এদিকে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবুল হোসেন জানান, জেলা প্রশাসক স্যার পরিদর্শনে আসবেন এ বিষয়টি কেউ আমাকে আগে থেকে অবগত করেননি। এছাড়া তিনি যে আসবেন সেই বিষয়টি আমি কোনভাবেই অবগত ছিলাম না। জেলা প্রশাসক মহোদয় আসবেন জানলে অবশ্যই আমি ওই বিদ্যালয়ে উপস্থিত  থাকতাম।

বিকেল ৩টার দিকে তিনি এই প্রতিবেদককে জানান, আমি আমার কার্যালয়ে এই মুহুর্তে অবস্থান করছি। শোকজ করার বিষয়টি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, এই বিষয়টি আমি এখনও অবগত নই।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম বলেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীরা কি শিখছে? তারা আদৌ দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে কিনা সে বিষয়টি জানার জন্যেই আমি বিদ্যালয়টি পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। এ সময় মোগড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শরীর চর্চা বিভাগের শিক্ষক সোহরাব হোসেন স্যারকে জিজ্ঞাসা করলাম আপনি তো শিক্ষার্থীদের শরীর চর্চা করান। বিদ্যালয়ে অ্যাসেম্বলির সময় জাতীয় সংগীতও গাইতে সহযোগিতা করেন। আপনি কি জাতীয় সংগীতের কয়েক লাইন গেয়ে শুনাবেন? কিন্তু তিনি শুদ্ধ ও সঠিক ভাবে জাতীয় সংগীত গাইতে পারছিলেন না। তখন আমি তাকে প্রশ্ন করলাম আপনি নিজেই সঠিক ভাবে জাতীয় সংগীত গাইতে পারলেন না শিক্ষার্থীদের কি শিখাবেন? এ বিষয়টি তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, বিদ্যালয় পরিদর্শনের বিষয়টি আগেই উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবগত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারও নিশ্চয় অবগত ছিলেন। বিদ্যালয় পরিদর্শন কালে তিনি অনুপস্থিত ছিলেন। তাই তার অনুপস্থিত থাকার কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে।

পরে জেলা প্রশাসক বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শ্রেণিকক্ষ পরিদর্শন করেন এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন।

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

শুদ্ধভাবে জাতীয় সংগীত গাইতে পারেননি কর্মকর্তা

শিক্ষা অফিসারকে শোকজ

আপডেট সময় : ০৬:২২:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩

শুদ্ধ ও সঠিকভাবে জাতীয় সংগীত গাইতে না পারায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার প্রাচীন বিদ্যাপীঠ মোগড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শরীর চর্চা বিভাগের শিক্ষক সোহরাব হোসেনকে শোকজ করেছেন জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম।

মঙ্গলবার দুপুরে তিনি বিদ্যালয়টি পরিদর্শনকালে এই শোকজ করেন। এ সময় বিদ্যালয় সম্পর্কে খোঁজ খবর না রাখা এবং প্রশাসকের পরিদর্শনকালে অনুপস্থিত থাকায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবুল হোসেনকেও শোকজ করেন।

এ ব্যাপারে মোগড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শশাঙ্ক রায় চৌধুরী জানান, জেলা প্রশাসক স্যার হঠাৎ করেই বিদ্যালয়ে প্রবেশ করেছেন। এ সময় তিনি বিদ্যালয়ের মাঠে শরীর চর্চা বিভাগের শিক্ষক সোহরাব হোসেন স্যারকে পেয়ে তার নাম পরিচয় জিজ্ঞাসা করেন। এক পর্যায়ে তাকে শুদ্ধভাবে জাতীয় সংগীত গাইতে বলেন। সম্ভবত তিনি অপ্রস্তুত হয়ে যাওয়ার কারণে সঠিকভাবে জাতীয় সংগীত গাইতে পারছিলেন না। এ সময় ডিসি স্যার তাকে প্রশ্ন করেন, আপনি সঠিক ভাবে জাতীয় সংগীত গাইতে না পারলে শিক্ষার্থীদের কিভাবে শেখাবেন?

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী ও মোগড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শরীর চর্চা বিভাগের শিক্ষক সোহরাব হোসেন জানান, জেলা প্রশাসক স্যার হঠাৎ করে মাঠে প্রবেশ করেন। এ সময় তিনি বিদ্যালয়ের মাঠে গোচারণ দেখে কিছুটা অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এক পর্যায়ে আমাকে ডেকে নেন এবং আমার নাম পরিচয় জানতে চান। নাম পরিচয় দেয়ার পর ডিসি স্যার আমাকে জাতীয় সংগীত শুদ্ধভাবে গাইতে বলেন। কিন্তু আমি অপ্রস্তুত হয়ে পড়ি। যার কারণে সঠিকভাবে জাতীয় গাইতে পারছিলাম না। তাই ডিসি স্যার আমার কাছে কারণ জানতে চেয়েছেন কেনো শুদ্ধ এবং সঠিকভাবে জাতীয় সংগীত গাইতে পারিনি।
এদিকে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবুল হোসেন জানান, জেলা প্রশাসক স্যার পরিদর্শনে আসবেন এ বিষয়টি কেউ আমাকে আগে থেকে অবগত করেননি। এছাড়া তিনি যে আসবেন সেই বিষয়টি আমি কোনভাবেই অবগত ছিলাম না। জেলা প্রশাসক মহোদয় আসবেন জানলে অবশ্যই আমি ওই বিদ্যালয়ে উপস্থিত  থাকতাম।

বিকেল ৩টার দিকে তিনি এই প্রতিবেদককে জানান, আমি আমার কার্যালয়ে এই মুহুর্তে অবস্থান করছি। শোকজ করার বিষয়টি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, এই বিষয়টি আমি এখনও অবগত নই।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম বলেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীরা কি শিখছে? তারা আদৌ দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে কিনা সে বিষয়টি জানার জন্যেই আমি বিদ্যালয়টি পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। এ সময় মোগড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শরীর চর্চা বিভাগের শিক্ষক সোহরাব হোসেন স্যারকে জিজ্ঞাসা করলাম আপনি তো শিক্ষার্থীদের শরীর চর্চা করান। বিদ্যালয়ে অ্যাসেম্বলির সময় জাতীয় সংগীতও গাইতে সহযোগিতা করেন। আপনি কি জাতীয় সংগীতের কয়েক লাইন গেয়ে শুনাবেন? কিন্তু তিনি শুদ্ধ ও সঠিক ভাবে জাতীয় সংগীত গাইতে পারছিলেন না। তখন আমি তাকে প্রশ্ন করলাম আপনি নিজেই সঠিক ভাবে জাতীয় সংগীত গাইতে পারলেন না শিক্ষার্থীদের কি শিখাবেন? এ বিষয়টি তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, বিদ্যালয় পরিদর্শনের বিষয়টি আগেই উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবগত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারও নিশ্চয় অবগত ছিলেন। বিদ্যালয় পরিদর্শন কালে তিনি অনুপস্থিত ছিলেন। তাই তার অনুপস্থিত থাকার কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে।

পরে জেলা প্রশাসক বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শ্রেণিকক্ষ পরিদর্শন করেন এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন।