
এবার সপ্তমবারের মতো হজযাত্রী নিবন্ধনের সময়সীমা ছয়দিন বাড়িয়ে বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। কোটা পূরণ না হওয়ায় (৩০ মার্চ) ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ।
এতে বলা হয়, সরকারি ব্যবস্থাপনা এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রী নিবন্ধনের সময়সীমা আগামী ৫ এপ্রিল পর্যন্ত বর্ধিত করা হলো। নিবন্ধনের জন্য সরকারি ও বেসরকারি উভয় ব্যবস্থাপনায় প্রাক-নিবন্ধনের ক্রমিক উন্মুক্ত রয়েছে এবং উভয় ব্যবস্থাপনায় নতুন করে প্রাক-নিবন্ধন করে হজে যাওয়ার সুযোগ আছে।
কোটা পূর্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিবন্ধন সার্ভার স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। আগের নির্বারিত সময় অনুযায়ী হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) শেষ হওয়ার কথা ছিল।
এবার হজের খরচ অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ায় আগের তুলনায় হজের নিবন্ধন কিছুটা কমে গিয়েছে। এর আগে ছয় দফা সময় বাড়িয়েও কোটা পূরণ করা যায়নি। অন্যদিকে সৌদি আরবে সেবামূল্য কমানোর কারণে চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে সরকারি ও বেসরকারিভাবে হজ পালনে খরচ ১১ হাজার ৭২৫ টাকা কমানোও হয়েছে। সৌদি আরবের সঙ্গে হজচুক্তি অনুযায়ী, এবার বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এরমধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার জন ও অবশিষ্ট এক লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ করার সুযোগ পাবেন।
হজ পোর্টালের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত মোট এক লাখ ১৮ হাজার ২৮৬ জন হজযাত্রী নিবন্ধিত হয়েছেন। এরমধ্যে সরকারিভাবে ৯ হাজার ৯৩৫ জন এবং বেসরকারিভাবে এক লাখ ৮ হাজার ৩৫১ জন নিবন্ধিত হয়েছেন। এখনও কোটা পূরণে ৮ হাজার ৯১২ জন হজযাত্রীর নিবন্ধন বাকি আছে।
চলতি বছর হজে যেতে হজযাত্রী নিবন্ধন শুরু হয় গত ৮ ফেব্রুয়ারি। ২৩ ফেব্রুয়ারি নিবন্ধনের শেষ সময় থাকলেও তা বাড়িয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি করা হয়। তবে কোটার বিপরীতে খুবই কম সংখ্যক হজযাত্রী নিবন্ধিত হন। পরে নিবন্ধনের সময় ৭ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। সেই সময়েও কোটার অর্ধেকেরও কম হজযাত্রী নিবন্ধিত হয়। সর্বশেষ নিবন্ধনের সময় ১৬ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এ সময়ের মধ্যেও সাড়া পাওয়া যায়নি। শেষে নিবন্ধনের সময় ২১ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
পরে হজের খরচ ১১ হাজার ৭২৫ টাকা কমানোর সঙ্গে নিবন্ধনের সময় ২৭ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল। কিন্তু এরমধ্যেও সাড়া মেলেনি হজযাত্রীদের, তাই নিবন্ধনের সময় ৩০ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
গত বছর সরকারিভাবে দুটি প্যাকেজের মাধ্যমে হজ হয়। সেই অনুযায়ী প্যাকেজ-১ এর ক্ষেত্রে এবার খরচ বাড়ে ৯৬ হাজার ৬৭৮ টাকা, প্যাকেজ-২ এর ক্ষেত্রে খরচ বাড়ে এক লাখ ৬১ হাজার ৮৬৮ টাকা। বেসরকারিভাবে হজ পালনে গত বছরের তুলনায় এবার খরচ বাড়ে এক লাখ ৪৯ হাজার ৮৭৪ টাকা। এবারের হজে যাওয়ার খরচ অনেকেরই সাধ্যের বাইরে চলে গেছে।
পরে সৌদি প্রান্তের খরচ কমায় গত ২২ মার্চ সরকারি ও বেসরকারি হজের প্যাকেজ মূল্য কমানোর ঘোষণা দেয় ধর্ম মন্ত্রণালয়। তখন মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, সরকারি ব্যবস্থাপনায় মিনার তাঁবু ‘সি’ ক্যাটাগরি ধরে প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে, তাই সরকারি প্যাকেজ মূল্য ৪১৩ সৌদি রিয়াল সমপরিমাণ ১১ হাজার ৭২৫ টাকা কমানো হয়েছে। এজন্য সরকারি ব্যবস্থাপনায় বর্তমান হজ প্যাকেজ মূল্য কমিয়ে (৬,৮৩,০১৫-১১,৭২৫) ৬ লাখ ৭১ হাজার ২৯০ টাকা নির্ধারণ করা হলো।