কক্সবাজার সৈকতে এবার ভেসে এলো ইরাবতি প্রজাতির দুইটি ডলফিন। সুগন্ধা পয়েন্টে ভেসে আসা ডলফিনের মধ্যে একটি জোয়ারের পানিতে পুনরায় সাগরে ভেসে যায়। আরেকটি সৈকতের বালিয়াড়িতে মৃত অবস্থায় আটকে পড়ে।
বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ও সমুদ্রবিজ্ঞানী সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর জানান, মৃত ডলফিনটির ওজন আনুমানিক ১২-১৫ কেজি ও ৩ ফুট লম্বা। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, মৃত ডলফিনটির দেহে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, জেলেদের জালে আটকা পড়ে কিংবা অন্যকোনভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে ডলফিনটির মৃত্যু হয়েছে।
তিনি বলেন, ইরাবতি ডলফিন তীর থেকে বেশি দূরে যায় না। আর উপকূলের কাছাকাছি বাস করায় মাছের জালে আটকা পড়ে এবং বাসস্থান ধ্বংস হয়ে যায়। এদের বিস্তৃতি বঙ্গোপসাগর থেকে নিউ গিনি ও ফিলিপাইন পর্যন্ত। বর্তমানে এদের সংখ্যা আনুমানিক সাত হাজারের অধিক বলে ধারণা করা হয়। যার ৯০ শতাংশই বাংলাদেশে বাস করে। বাংলাদেশ, ভারত, লাওস, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন ও থাইল্যান্ডে ইরাবতি ডলফিনের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ ও ভারতে এই ডলফিনকে অতিবিপন্ন প্রাণী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর বলেন, পেশাদার জেলেদের সাথে ইরাবতি ডলফিনের সম্পর্ক রয়েছে। বিশেষ করে, ভারত ও মায়ানমারের জেলেরা ইরাবতি ডলফিনদেরকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় ডাক দেয়, এতে সাড়া দিয়ে ইরাবতি ডলফিন মাছ তাড়িয়ে জেলেদের গোলাকৃতি জালে পাঠায়। পুরস্কার হিসেবে জেলেদের জালে যে অপ্রয়োজনীয় মাছ ধরা পড়ে সেগুলো ইরাবতি ডলফিনদের দেয়া হয়। এশিয়ার বেশকিছু দেশে এই ডলফিন ধরে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পাবলিক অ্যাকুয়ারিয়ামে প্রদর্শন করা হয়। এদের অভিনব উপস্থিতি এবং আচরণ, পানি ছেঁটানো, ডুব দেয়া ও লেজ ঝাঁপটানোর দৃশ্য দেখে মানুষ বিমোহিত হয়।
বাংলাদেশে ইরাবতি ডলফিনের আবাসস্থল চিহ্নিত করা, বিচরণ নিরাপদ করা ও ক্ষতিকর জাল ব্যবহার নিষিদ্ধ করার মাধ্যমে এদের সংরক্ষণে সংশ্লিষ্ট সকলের এগিয়ে আসা প্রয়োজন বলে মনে করেন এই সমুদ্রবিজ্ঞানী।