পদ্মা সেতু চালুর পর যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল এখন বন্ধের পথে। অন্যদিকে যাত্রীদের লঞ্চে ওঠানামার জন্য আধুনিক টার্মিনাল নির্মাণের প্রকল্প হাতে নিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ।
পুরনো টার্মিনালটিও নতুনভাবে গড়ে তোলা হবে, যার মোট ব্যয় প্রায় ৩৪ হাজার কোটি টাকা। লঞ্চ মালিক ও ঢাকা নদীবন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, বর্তমান টার্মিনালগুলো পুরোপুরি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী বলছেন, প্রয়োজন না হলে প্রকল্পের বরাদ্দ কমানো হবে।
গত রোজার ঈদের আগে ও পরে ৮ থেকে ১০ দিন কিছুটা যাত্রীচাপ বাড়লেও এখন আবারো যাত্রীশূণ্য হয়ে পড়েছে দেশের সবচেয়ে বড় যাত্রীবাহী এই নদী বন্দর।
লঞ্চ কর্তৃপক্ষ বলছে, কোরবানির ঈদের পর তারা আবার যাত্রীবাহী লঞ্চ চালাবে কিনা সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। আর ঢাকা নদীবন্দর কর্তৃপক্ষের দাবি, যাত্রী সংকটের কারণে তারা ইতোমধ্যে ৮ থেকে ১০টি রুট বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ’র নিয়ন্ত্রণ কর্মকতা আলমগীর কবির বলেন, পদ্মা সেতুর কারণে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ যাত্রী কমেছে। আর ৭ থেকে ৮টি রুট সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। সামনে আরো যাত্রী সংকট দেখা দিতে পারে।
এদিকে বাংলাদেশ আঞ্চলিক অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন প্রকল্প-১ এর আওতায় চারটি জেলায় যাত্রী টার্মিনাল ছাড়াও চট্টগ্রাম-আশুগঞ্জ-ঢাকা-বরিশাল মেরিটাইম করিডোরের চারপাশের শাখা নদীগুলো ড্রেজিং করা হবে।
বুড়িগঙ্গার পাড়ে পানগাঁওয়ের আশুগঞ্জ ও ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় দু’টি কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। এছাড়া ২টি বহুমুখী জাহাজ কেনা হবে। আর এ প্রকল্পে দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন পয়েন্টে ১৫টি যাত্রীবাহী লঞ্চঘাট করা হবে।
নতুন টার্মিনাল করার প্রকল্প হাতে নেয়া হলেও ঢাকা সদরঘাটে দেখা যায়, বর্তমানে যে দুটি যাত্রী টার্মিনাল ভবন রয়েছে তা পুরোপুরি ব্যবহার হয় না। ৯০ শতাংশ লঞ্চ কাউন্টার এখনও চালুই হয়নি। যাত্রী বসার স্থানে দেখা মেলে না কোনো যাত্রীর। তিনতলায় ঢাকা নদী বন্দরের কার্যালয় থাকলেও চারতলায় এখনো কয়েকটা কক্ষ অব্যবহৃত রয়েছে।
বর্তমান প্রকল্পে নারায়ণগঞ্জে যাত্রী টার্মিনাল থাকলেও সেখানে কোন যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল করে না। আর বরিশালেও বর্তমানে যে টার্মিনাল আছে তা বর্তমান যাত্রী বিবেচনায় যথেষ্ট। তবে চাঁদপুরে নতুন যাত্রী টার্মিনালের চাহিদা রয়েছে।
এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যানের দাবি, যাত্রীবাহী লঞ্চের চাহিদা কমবে না। বরং পণ্য পরিবহনে এসব টার্মিনাল ব্যবহার হবে।
বিষয়টি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তারা জানান, প্রকল্পটি যখন নেয়া হয়েছিল তখন যাত্রীবাহী লঞ্চের চাহিদা ছিলো। সে চাহিদা এখন না থাকলে প্রয়োজনে প্রকল্পটি সংশোধন করা হবে বলে জানান পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী।
২০১৭ সালে অনুমোদন হওয়া প্রকল্পটি ২০২৫ এর ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা। বর্তমানে প্রকল্পটির কাজের অগ্রগতি ৪০ শতাংশ। এই ঋণের অর্থ বিআইডব্লিউটিএ’র পরিশোধ করতে হবে না।