রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) অর্ধশতাধিক শিক্ষক পদোন্নতির দাবিতে রুটিন দায়িত্বে থাকা উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেনকে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন।
আজ রোববার বেলা ১১টা থেকে তাকে অবরুদ্ধ করা হয়। সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তিনি সেখানেই অবরুদ্ধ অবস্থায় ছিলেন।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৩০ জুলাই রুয়েটের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক উপাচার্যের পদ শূন্য হয়ে যায়। এরপর ১০ মাস থেকে রুটিন দায়িত্বে অতিরিক্ত উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করছেন অ্যাপ্লাইড সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যানিটিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেন।
আন্দোলনরত শিক্ষকদের অভিযোগ, ১১ মাস ধরে ক্যাম্পাসে উপাচার্য নেই। অভিভাবক না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে চরম স্থবিরতা নেমে এসেছে। এ ছাড়া সব শর্ত পূরণ করেও গত ১৫ মাসে অন্তত ৮০ জন শিক্ষক তাদের ন্যায্য পদোন্নতি ও আপগ্রেডেশন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
পদোন্নতির দাবিতে আজ বেলা ১১টার দিকে রুয়েট শিক্ষক সমিতির কয়েকজন নেতার সঙ্গে শিক্ষকরা উপাচার্যের দপ্তরে যান। এ সময় রুটিন দায়িত্বের উপাচার্যকে পদোন্নতির বিষয়টি জানালে তার হাতে কোনো ক্ষমতা নেই বলে তিনি জানান। এরপর থেকে থেকেই শিক্ষকরা ড. সাজ্জাদের দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের পাশাপাশি তাকে তার দপ্তর থেকে বের হতে দিচ্ছেন না।
আন্দোলনরত শিক্ষকরা জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত উপাচার্য না থাকায় গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে শেষ বিজ্ঞপ্তির পর আর কোনো নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিওজারি করা হয়নি। এ ছাড়া উত্তরাঞ্চলের একমাত্র এই প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়টির নানা উন্নয়ন কর্মকাণ্ডও থমকে আছে। এভাবে চলতে থাকলে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে যাবে রুয়েট। এজন্য তারা দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণাঙ্গ উপাচার্য নিয়োগ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে বাঁচানোর অনুরোধ জানান।
রুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রবিউল আউয়াল জানান, উপাচার্য অধ্যাপক মো. রফিকুল ইসলাম শেখ গত বছরের জুলাই মাসে তার মেয়াদ পূর্ণ করলে সরকার আগস্ট মাসে ভিসির দৈনন্দিন কার্য সম্পাদনের জন্য অ্যাপ্লায়েড সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যানিটিস ফ্যাকাল্টির ডিন অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেনকে নিয়োগ দেয়।
তিনি বলেন, ‘সাজ্জাদ হোসেনের নিয়োগে রুয়েটের নিয়ম লঙ্ঘন করা হয়। নিয়মে উল্লেখ আছে, প্রকৌশল অনুষদের শিক্ষক ছাড়া অন্য কেউ ভিসির দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। কিন্তু তারপরও তাকে দিয়েই দীর্ঘ ১০ মাস থেকে ক্যাম্পাস পরিচালনা করছেন। অথচ তার কারণেই ক্যাম্পাসের ছাত্র-শিক্ষকরা নানামুখী ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।’
এ বিষয়ে রুটিন দায়িত্বের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।