বাংলাদেশের দক্ষিণে মাছ ও প্রানীর এক অভয়ারণ্য সুন্দরবন। সুন্দরবনের ৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার বাংলাদেশ অংশে জলভাগের পরিমান ১৮শ’ ৭৪.১ বর্গকিলোমিটার। যা সমগ্র সুন্দরবনের আয়তনের ৩১.১৫ ভাগ। সুন্দরবনের জলভাগকে বলা হয় মৎস্য সম্পদের ভাণ্ডার। সুন্দরবনের জলভাগে ২১০ প্রজাতির সাদামাছ, ২৪ প্রজাতির চিংড়ি, ১৪ প্রজাতির কাঁকড়া, ৪৩ প্রজাতির মালাস্কা ও ১ প্রজাতির লবস্টার রয়েছে।
বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সুন্দরবনে মৎস্যসম্পদ রক্ষায় ইন্টিগ্রেটেড রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্ট প্ল্যানেলের (আইআরএমপি) সুপারিশ অনুযায়ী ২০১৯ সাল থেকে প্রতিবছর প্রতিবছর ১লা জুলাই থেকে ৩১শে আগস্ট পর্যন্ত ২ মাস সব নদী-খালে মাছ আহরণ বন্ধ থাকছে। এ বছর তা আরও এক মাস বাড়িয়ে ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সব নদী ও খালে মাছ আহরণ বন্ধ রাখার প্রথা চালু হয়েছে।
বনের নদী ও খালে নৌযান চলাচল করলে মাছের ডিম ছাড়তে সমস্যা হবে। তাই সব ধরনের নৌযান চলাচলও বন্ধ থাকবে।মাছের প্রজনন ও বন্যপ্রাণীর বংশবৃদ্ধি নির্বিঘ্ন করতে ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সব ধরনের নৌযান, পর্যটকবাহী লঞ্চ-জালিবোটসহ সকল জেলে বাওয়ালির বনে প্রবেশ নিষিদ্ধ, এমনকি সাধারণ মানুষের চলাচলসহ নদী-খালে মাছ শিকারও বন্ধ করা হয়েছে।
সুন্দরবনে ২৫১ প্রজাতির মাছের প্রজনন কার্যক্রমের সুরক্ষায়, মাছ ও বন্যপ্রাণীর বংশবৃদ্ধি, বিচরণে বৃহস্পতিবার থেকে তিন মাসের জন্য সুন্দরবনে প্রবেশাধিকার বন্ধ হচ্ছে। সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান বনে ৩১৫ প্রজাতির পাখি, ৩৫ প্রকারের সরীসৃপ, ৪২ প্রকারের স্তন্যপায়ী প্রাণী রয়েছে।
এসব বণ্যপ্রাণীর মধ্যে রয়েছে— বাঘ, হরিণ, শুকর, বানর, কুমির, ডলফিন, ভোদড়, বনবিড়াল ও মেছোবাঘ। এখন তাদের প্রজনন মৌসুম চলছে। এজন্য এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে বন, পরিবেশ মন্ত্রণালয় ও মৎস্য অধিদপ্তর।
ফলে একমাত্র বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র করমজল, পর্যটক স্পট হারবাড়িয়া, কটকা, কচিখালী, হিরোন পয়েন্ট, নীল কমল, দুবলা, আলোর কোল, টাইগার পয়েন্ট কলাগাছিয়াসহ ১১টি স্পটে বন্ধ হচ্ছে পর্যটক প্রবেশ। বন্ধ করা হয়েছে সুন্দরবনে প্রবেশের সব ধরনের পাস-পারমিট। একইসঙ্গে সুন্দরবনের ভেতরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।