ব্যাপক আলোচিত-সমালোচিত রাজধানীর গ্রিন রোডের সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসা এবং কর্তৃপক্ষের প্রতারণায় নবজাতকের মৃত্যু ও মৃত্যুঝুঁকিতে থাকা প্রসূতি মাহবুবা রহমান আঁখির ঘটনায় আজ দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন ডা. শাহজাদী মুস্তার্শিদা সুলতানা ও ডা. মুনা সাহা। ইতিমধ্যে তারা এই ঘটনায় নিজেদের দায় স্বীকার করেন।
সেন্ট্রাল হসপিটালে ভুল চিকিৎসা ও কর্তৃপক্ষের অবহেলায় মাহবুবা রহমান আঁখি নামে এক প্রসূতি মৃত্যুঝুঁকিতে পড়েন এবং মৃত্যু বরন করে তাঁর নবজাতক সন্তান। মাহবুবা রহমান আঁখির স্বামী ইয়াকুব আলী সুমনের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়।
গত কয়েক মাস ধরে সেন্ট্রাল হসপিটালের গাইনি ও প্রসূতি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. সংযুক্তা সাহার অধীনে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছিলেন মাহবুবা রহমান আঁখি। তার শারীরিক অবস্থা স্বাভাবিক ছিল বলে চিকিৎসক জানিয়েছিলেন। রোগীকে নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে তার সন্তান প্রসব সম্ভব বলে আশ্বস্ত করেছিলেন ডা. সংযুক্তা সাহা।
প্রসব ব্যথা ওঠায় গত ৯ জুন রাত ১২টা ৫০ মিনিটে সেন্ট্রাল হসপিটালে ডা. সংযুক্তা সাহার অধীনে ভর্তি করা হয় মাহবুবা রহমান আঁখিকে। তখন ডা. সংযুক্তা সাহা হাসপাতালে উপস্থিত না থাকলেও রোগীর পরিবারকে আশ্বস্ত করা হয় এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, তিনি আছেন এবং ওটিতে (অপারেশন থিয়েটার) কাজ করছেন।
এ প্রসঙ্গে ডা. সংযুক্তা সাহা বলেন,‘ আমি না থাকা সত্ত্বেও যদি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলে থাকে আমি আছি, আমার আশ্বাস দিয়ে তাকে ওটিতে নিয়ে যায়, তাহলে এটি অবশ্যই অপরাধ। আমি স্বাভাবিকভাবেই হসপিটালে নাও থাকতে পারি। আমি তো একজন মানুষ। হঠাৎ করে আমিও অসুস্থ হতে পারি। যদি হাসপাতালে এসে জিজ্ঞেস করা হয় যে, সংযুক্তা ম্যাডাম আছে, তাহলে অবশ্যই বলতে হবে না, তিনি নেই। আমি মনে করি, এটাই ফেয়ার।’
এদিকে আজ বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) ডা. শাহজাদী মুস্তার্শিদা সুলতানা ও ডা. মুনা সাহাকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করে পুলিশ। পরে তারা উভয়েই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে রেকর্ড করা হয় । ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফারহা দিবা ছন্দা আসামি ডাঃ মুনা ও ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আফনান সুমি ডাঃ শাহজাদীর জবানবন্দি রেকর্ড করেন।