জামালপুরের বকশীগঞ্জে সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিমকে তার দাদা-দাদির কবরের পাশে চিরশায়িত করা হয়েছে।
শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বকশীগঞ্জের নীলাক্ষিয়া ইউনিয়নের গোমেরচরে গ্রামের বাড়িতে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
এর আগে সকাল ১০টায় বকশীগঞ্জ নুর মুহাম্মদ উচ্চবিদ্যালয় মাঠে নাদিমের প্রথম জানাজার নামাজ সম্পন্ন হয়। এরপর গোমেরচর জিগাতলা ঈদগাহ মাঠে তার দ্বিতীয় জানাজার নামাজ হয়।
জানাজার আগে পরিবারের পক্ষে নাদিমের বড় ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন রিফাত বক্তব্য রাখেন।
এসময় নাদিমের প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধাঞ্জলি জানায় জামালপুর প্রেস ক্লাব, জামালপুর অনলাইন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনসহ গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠন।
জানাজা ও দাফনে নাদিমের দীর্ঘদিনের সহকর্মী সাংবাদিকসহ শুভানুধ্যায়ী, আত্মীয়-স্বজন এবং উপজেলা-জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশ নেন।
জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ সোহেল রানা, জেলা পরিষদ সদস্য জয়নাল আবেদীন, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম জুম্মান, জামালপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি হাফিজ রায়হান সাদা, টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন মিন্টু, অনলাইন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শওকত জামান, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আগা সাইম, বকশীগঞ্জ পৌরসভার প্যানেল মেয়র মিজানুর রহমান, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক জাহিদুল ইসলাম প্রিন্স, সাংবাদিক আশরাফুল হায়দার, বকশীগঞ্জ উপজেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি হেদায়েত উলাহ্, বকশীগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি শাহিন আল আমিন, বিএনপি নেতা আবদুল্লাহ্ আল সাফি, মডেল প্রেস ক্লাবের সভাপতি এমদাদুল হক লালন প্রমুখ।
বক্তব্যে জামালপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি হাফিজ রায়হান সাদা সাংবাদিকদের পক্ষে বলেন, সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম হত্যার মূল হোতা সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুসহ সব হামলাকারী আটক না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।
গোলাম রাব্বানী নাদিম অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমের জামালপুর ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট এবং একাত্তর টেলিভিশন ও দৈনিক মানবজমিনের বকশীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি ছিলেন। তিনি জামালপুর অনলাইন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনেরও সহ-সভাপতি ছিলেন।
গত ১৪ জুন রাতে পেশাগত দায়িত্বপালন শেষে বাড়ি ফেরার পথে বকশীগঞ্জের পাথাটিয়ায় ১০-১২ জন সন্ত্রাসী নাদিমকে পিটিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। কিন্তু তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানেও অবস্থার কোনো উন্নতি না হওয়ায় বৃহস্পতিবার সকালে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
নাদিমের পরিবারের অভিযোগ, বকশীগঞ্জের সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর লোকজন এ হামলা চালিয়েছে।