ঢাকা ০৩:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চাচার হাতে ভাতিজা খুন

  • অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১১:৩৪:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ জুন ২০২৩
  • ১৬৬৭ বার পড়া হয়েছে

 

গত ১২ জুন ২০২৩ তারিখে মিরপুর প্রাইম ইউনিভার্সিটির ছাত্র রিয়াদ হোসেন (২১) নিখোঁজ হওয়ার পর রিয়াদের পরিবার জিএমপি, সদর থানায় একটি জিডি করে। গত ১৬ জুন গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানাধীন রতনপুর ধোপাচালা এলাকার বনের ভেতর ফাঁকা জায়গা থেকে রিয়াদ হোসেন এর লাশের পকেটে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়পত্র থেকে নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করে পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলে লাশের পরিচয় সনাক্ত হয়।

 

র‌্যাব-১, উত্তরা, ঢাকার সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া অফিসার) সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ পারভেজ রানা জানান
শনিবার রাতে র‌্যাব-১, উত্তরা, ঢাকার একটি আভিযানিক দল তথ্য-প্রযুক্তি ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানাধীন মাদনপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এই চাঞ্চল্যকর হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ও প্রধান আসামি নিহতের প্রবাস ফেরত চাচা মোঃ নাঈম হোসেনকে (৩৪) গ্রেফতার করে। দেশে নিজের যুবতী স্ত্রীকে দেখাশোনার জন্য রিয়াদের কাছে রেখে সৌদিতে কাজে যায়  ও দুই বছর যাবত টাকা পাঠান ফুলবাড়ী থানাধীন পশ্চিম নারায়নপুর নামক একই গ্রামের বাসিন্দা দূর সম্পর্কের ভাতিজা রিয়াদকে।

 

কিন্তু ২০১৯-২০২১ সাল পর্যন্ত সৌদিতে থাকার সময় তার মনে সন্দেহ জাগে তার স্ত্রীর সাথে ভাতিজার পরকীয়া চলছে। এতে সন্দেহের জেরে ২০২১ সালের জুন মাসে  সৌদি আরব থেকে কাজ রেখে বাংলাদেশে চলে আসে এবং দুই পরিবার কে বিষয়টি জানায়। এতে কোন সুরাহা না হলে নাঈম গত ২০২২ সালের জুন মাসের দিকে তার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে দিনাজপুর থেকে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বাসা ভাড়া নিয়ে রিয়াদের কাছ থেকে দূরে চলে আসে। তার পরও রিয়াদ এবং তার স্ত্রীর মাঝে প্রেমের সম্পর্কের টানাপোড়েনে সংসারে অশান্তি, মনোমালিন্য চলতে থাকলে রাগ জেদের বশবর্তী হয়ে রিয়াদকে হত্যা করার জন্য এলাকার জনৈক পলাশ নামে এক ব্যক্তির সাথে ৫০ হাজার টাকায় চুক্তি ও খুনের সুপারি দেয়।

 

বিভিন্ন সময়ে রিয়াদকে হত্যা করার জন্য পলাশকে চাপ দিলেও পলাশ খুন করতে রাজি হয়না। ২০ মার্চ ২০২৩ তারিখে নাঈম রিয়াদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে পলাশসহ তাকে মেস থেকে চলতি মাসের ১৩ তারিখে আনুমানিক সাড়ে ৪টার দিকে গাজীপুরের কালিয়াকৈর মৌচাক এলাকায় নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করে।

 

আনুমানিক সন্ধ্যা ৭টার দিকে নাঈম রিয়াদকে তার ভাড়া নেয়া পুকুরপাড়ে নিয়ে যায় এবং পলাশকে হত্যা শুরু করার জন্য বলে। এতে তখনো পলাশ রিয়াদকে খুন করতে অনিচ্ছা প্রকাশ করে। তারপর নাঈম নিজেই খুনের সিদ্ধান্ত নেয় ও কৌশলে রিয়াদের মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে মোবাইলের সকল ডাটা ডিলেট করে এবং পূর্বের ঘটনা নিয়ে কথা কাটাকাটি শুরু করে। একপর্যায়ে রাত পৌনে ২টার দিকে নাঈম রিয়াদকে নিয়ে পুকুর পাড় থেকে কালিয়াকৈরের রতনপুর ধোপাচালা এলাকার বনের ভেতর চলে আসে এবং নিজেই তার পরিহিত টি-শার্ট খুলে রিয়াদের গলায় ফাঁস লাগিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে সেখান থেকে পালিয়ে যায়।

নাঈম দিনাজপুর জেলার ইন্তাজুল ইসলামের ছেলে। গ্রেফতার নাঈমের দেয়া তথ্যমতে ঘটনাস্থলের পার্শ্ববর্তী শফিপুর আন্দারমানিক পূর্ব পাড়া এলাকার একটি ড্রেন থেকে নিহত রিয়াদের ব্যবহৃত ১টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

চাচার হাতে ভাতিজা খুন

আপডেট সময় : ১১:৩৪:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ জুন ২০২৩

 

গত ১২ জুন ২০২৩ তারিখে মিরপুর প্রাইম ইউনিভার্সিটির ছাত্র রিয়াদ হোসেন (২১) নিখোঁজ হওয়ার পর রিয়াদের পরিবার জিএমপি, সদর থানায় একটি জিডি করে। গত ১৬ জুন গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানাধীন রতনপুর ধোপাচালা এলাকার বনের ভেতর ফাঁকা জায়গা থেকে রিয়াদ হোসেন এর লাশের পকেটে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়পত্র থেকে নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করে পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলে লাশের পরিচয় সনাক্ত হয়।

 

র‌্যাব-১, উত্তরা, ঢাকার সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া অফিসার) সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ পারভেজ রানা জানান
শনিবার রাতে র‌্যাব-১, উত্তরা, ঢাকার একটি আভিযানিক দল তথ্য-প্রযুক্তি ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানাধীন মাদনপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এই চাঞ্চল্যকর হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ও প্রধান আসামি নিহতের প্রবাস ফেরত চাচা মোঃ নাঈম হোসেনকে (৩৪) গ্রেফতার করে। দেশে নিজের যুবতী স্ত্রীকে দেখাশোনার জন্য রিয়াদের কাছে রেখে সৌদিতে কাজে যায়  ও দুই বছর যাবত টাকা পাঠান ফুলবাড়ী থানাধীন পশ্চিম নারায়নপুর নামক একই গ্রামের বাসিন্দা দূর সম্পর্কের ভাতিজা রিয়াদকে।

 

কিন্তু ২০১৯-২০২১ সাল পর্যন্ত সৌদিতে থাকার সময় তার মনে সন্দেহ জাগে তার স্ত্রীর সাথে ভাতিজার পরকীয়া চলছে। এতে সন্দেহের জেরে ২০২১ সালের জুন মাসে  সৌদি আরব থেকে কাজ রেখে বাংলাদেশে চলে আসে এবং দুই পরিবার কে বিষয়টি জানায়। এতে কোন সুরাহা না হলে নাঈম গত ২০২২ সালের জুন মাসের দিকে তার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে দিনাজপুর থেকে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বাসা ভাড়া নিয়ে রিয়াদের কাছ থেকে দূরে চলে আসে। তার পরও রিয়াদ এবং তার স্ত্রীর মাঝে প্রেমের সম্পর্কের টানাপোড়েনে সংসারে অশান্তি, মনোমালিন্য চলতে থাকলে রাগ জেদের বশবর্তী হয়ে রিয়াদকে হত্যা করার জন্য এলাকার জনৈক পলাশ নামে এক ব্যক্তির সাথে ৫০ হাজার টাকায় চুক্তি ও খুনের সুপারি দেয়।

 

বিভিন্ন সময়ে রিয়াদকে হত্যা করার জন্য পলাশকে চাপ দিলেও পলাশ খুন করতে রাজি হয়না। ২০ মার্চ ২০২৩ তারিখে নাঈম রিয়াদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে পলাশসহ তাকে মেস থেকে চলতি মাসের ১৩ তারিখে আনুমানিক সাড়ে ৪টার দিকে গাজীপুরের কালিয়াকৈর মৌচাক এলাকায় নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করে।

 

আনুমানিক সন্ধ্যা ৭টার দিকে নাঈম রিয়াদকে তার ভাড়া নেয়া পুকুরপাড়ে নিয়ে যায় এবং পলাশকে হত্যা শুরু করার জন্য বলে। এতে তখনো পলাশ রিয়াদকে খুন করতে অনিচ্ছা প্রকাশ করে। তারপর নাঈম নিজেই খুনের সিদ্ধান্ত নেয় ও কৌশলে রিয়াদের মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে মোবাইলের সকল ডাটা ডিলেট করে এবং পূর্বের ঘটনা নিয়ে কথা কাটাকাটি শুরু করে। একপর্যায়ে রাত পৌনে ২টার দিকে নাঈম রিয়াদকে নিয়ে পুকুর পাড় থেকে কালিয়াকৈরের রতনপুর ধোপাচালা এলাকার বনের ভেতর চলে আসে এবং নিজেই তার পরিহিত টি-শার্ট খুলে রিয়াদের গলায় ফাঁস লাগিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে সেখান থেকে পালিয়ে যায়।

নাঈম দিনাজপুর জেলার ইন্তাজুল ইসলামের ছেলে। গ্রেফতার নাঈমের দেয়া তথ্যমতে ঘটনাস্থলের পার্শ্ববর্তী শফিপুর আন্দারমানিক পূর্ব পাড়া এলাকার একটি ড্রেন থেকে নিহত রিয়াদের ব্যবহৃত ১টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।