আটলান্টিক সাগরে ডুবে যাওয়া টাইটানিক জাহাজ দেখতে রবিবার ১৮ ই জুন একটি পর্যটকবাহী ২১ ফিট ডুবোযান ৫/৬ জন যাত্রী নিয়ে ১২ হাজার ৫০০ ফিট সমুদ্রের তলদেশে যাত্রা করে । আটদিনের এই ট্রিপে একজন পর্যটককে খরচ করতে হয়েছে প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ড জানায়, ডুবোযানটি সাগরের তলদেশে নামার এক ঘণ্টা ৪৫ মিনিট পর এটির সঙ্গে যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে যায়। টুরিস্ট ফার্ম ওশেনগেট জানিয়েছে হারিয়ে যাওয়া ডুবোজাহাজটির নাম ‘টাইটান সাবমার্সিবল’ এবং এতে ৫ জন পর্যটক ছিলেন।
ধারনা করা হচ্ছে করাচির কংগ্লোমেরাট এনগ্রোর ভাইস চেয়ারম্যান শাহাজাদা দাউদ এবং তার ছেলে সুলেমানও ছিলেন ওই জাহাজে। ব্রিটিশ ব্যবসায়ী হামিশ হার্ডিংও ছিলেন জাহাজটিতে। তিনিও ব্রিটেনের অত্যন্ত প্রভাবশালী ব্যবসায়ী বলে পরিচিত।
শাহজাদা দাউদ ও তার ছেলে সুলেমান, ব্রিটিশ বিলিয়নিয়ার হামিস হার্ডিং , ফরাসি পর্যটক পল-হেনরি ও ওশানগেটের প্রধান নির্বাহী স্টকটন র্যাশ এই ৫ জন ছিলেন বলেও জানা যায়। ওশানগেট জানিয়েছে ডুবোযানটিতে যে অক্সিজেন রয়েছে তা দিয়ে চারদিন চলার কথা। ইতিমধ্যেই অক্সিজেনের অভাবের পাশাপাশি হাইপোথার্মিয়া বা কার্বন ডাই অক্সাইডের বিষক্রিয়ায় তাদের মৃত্যু হতে পারে। সংবাদমাধ্যম দ্য মিররকে ডুবোযানটির সাবেক কমান্ডিং অফিসার অ্যান্ডি কোলস জানিয়েছেন, `আমি মনে করি না যে ডুবোযানটিতে কার্বন ডাই অক্সাইড পরিশোধন এবং বাতাসকে পুনরায় সঞ্চালনের কোনো ব্যবস্থা আছে। ৯৬ ঘণ্টার অক্সিজেনের মজুত থাকা এই সাবমার্সিবলের যাত্রীরা এরই মধ্যে মারা যেতে পারেন। যদি না তাদের উদ্ধার করা হয়ে থাকে। তাই তারা সম্পূর্ণরূপে দমবন্ধ না হওয়ার আগেই সম্ভবত ঘুমন্ত বা অচেতন অবস্থায় চলে গেছে। অন্য যে বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে তা হলো তিন হাজার ৮০০ মিটার নিচে সমুদ্রের তলদেশ অবিশ্বাস্যভাবে ঠান্ডা। তারা সম্ভবত সেখানে কোন শক্তি এবং আলো পায়নি। কারণ যদি যানটিতে কোন যান্ত্রিক শক্তি থাকত, তাহলে তারা সমুদ্রের উপরিভাগে উঠে আসার চেষ্টা করত ।’
যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ডের একজন কর্মকর্তা সোমবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন নিখোঁজ ডুবোযানটি ৭০ ঘণ্টা কিংবা ৯৬ ঘণ্টা অতিক্রম হলে কোথাও না কোথাও পাওয়া যাবে।
১৯১২ সালে তৎকালীন বিশ্বের বৃহত্তম যাত্রীবাহী টাইটানিক জাহাজ সাউদাম্পটন থেকে নিউইয়র্কের উদ্দেশ্যে প্রথম সমুদ্রযাত্রায় কানাডার নিউ ফাউন্ডল্যান্ড উপকূল থেকে প্রায় ৬৫০ কিমি দূরে বিশাল বরফখণ্ডের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে ডুবে যায়। জাহাজটিতে ২ হাজার ২০০ জন যাত্রী ও কর্মী ছিলেন। ভয়াবহ দুর্ঘটনায় তাদের মধ্যে এক হাজার ৫০০ জনেরও বেশি মারা যান।