১৯৮৭ সালের ২৪ জুন। আর্জেন্তিনার রোজারিওতে জর্জ মেসি ও সেলিয়া কুচেত্তিনির সংসারের তৃতীয় সন্তান হিসেবে জন্ম নেন লিওনেল মেসি। জন্মানো বাচ্চাটা বাবা মার চিকিৎসা করার সামর্থ্য না থাকায় পায়ের যন্ত্রনা নিয়ে বছরে পর বছর কষ্ট করেছিল। চিকিৎসার জন্যই স্পেনের বার্সেলোনা শহরে যায় মেসির পরিবার। মাত্র ১১ বছর বয়সে গ্রোথ হরমোন ডেফিসিয়েন্সি ( হরমোনের প্রভাবে শরীরের স্বাভাবিক বৃদ্ধি থেমে যাওয়া ) ধরা পড়েছিল।
রাতের পর রাত পায়ে সূঁই ফুটিয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। তিন বছর এভাবে চলেছিল। পিট্যুইটারি গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হরমোনের তারতম্যের জেন্যে তাঁর শারীরিক বৃদ্ধি থেমে ছিল একটা সময়। দীর্ঘ চিকিৎসার পর বাচ্চাটা সেরে ওঠে।
২০০৪ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে বার্সেলোনা মূল স্কোয়াডে সুযোগ পান। গত ২ দশক যাবত ফুটবল দিয়ে মাতিয়ে রেখেছেন বিশ্ববাসীকে লিও। বার্সেলোনার হয়ে ৭৭৮ ম্যাচে ৬৭২ গোল আর পিএসজির হয়ে ৭৫ ম্যাচে ৩২ গোল দিয়েছেন এই আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার। জাতীয় দলের হয়ে ১৭৫ ম্যাচে এখন পর্যন্ত নামের পাশে ১০৩ গোল এলএমটেন এর। ক্লাব ও আন্তর্জাতিকে সর্বমোট ১০২৮ ম্যাচে ৮০৭ গোল করেছেন এই হার্টথ্রব সুপারস্টার। বার্সেলোনার হয়ে ক্লাব ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৩৫টি ট্রফি জিতেছেন মেসি। তার মধ্যে ১০টি লা লিগা, ৮ স্প্যানিশ সুপার কাপ, ৭টি কোপা দেল রে, ৪টি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, ৩টি ক্লাব বিশ্বকাপ ও ৩টি ইউরোপিয়ান সুপার কাপের ট্রফি। পিএসজির হয়ে ফ্রেঞ্চ লিগ সহ ৩টি ট্রফি জিতেছেন মেসি।
২০২১ সালে কোপা আমেরিকা ট্রফি জিতে আর্জেন্টিনার হয়ে প্রথম ট্রফি জয়ের স্বাদ পান মেসি। এরপরই অবশেষে ২০২২ সালে কাতারে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ফুটবলে নিজের প্রথম বিশ্বকাপ ট্রফি জিতে নিজের এবং আর্জেন্টিনার সমস্ত পূর্ণতা পূরণ করেন মেসি। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হবার পর প্রথম জন্মদিন নিশ্চিতভাবে অন্য যেকোন সময়ের চেয়ে দুর্দান্ত হবে। আগামী ৩০ জুন আনুষ্ঠানিক ভাবে ফরাসি ক্লাব পিএসজির সঙ্গে মেসির চুক্তি শেষ হবে। বর্তমানে মেসি তার মানসিক প্রশান্তি ও খেলার প্রতিযোগিতার সামাজিক চাপ থেকে দূরে থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাব ইন্টার মায়ামির একজন সদস্য হয়ে থাকবেন। শুভ জন্মদিন লিওনেল মেসি।