‘জীবনের নতুন অধ্যায়ের জন্য সবার কাছে দোয়া চাই। সবাইকে আবারও ধন্যবাদ।’ এই ঘোষনার মাধ্যমেই অধিনয়কত্ব সহ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটই ছেড়ে দিলেন তামিম ইকবাল। গতকাল বুধবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডেই ছিল সফল এ ওপেনারের শেষ ম্যাচ।
বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) বন্দরনগরীর জুবিলি রোডের ‘টাওয়ার ইন’ হোটেলে আচমকা এক সংবাদ সম্মেলেন এ ঘোষণা দেন তিনি। এসময় অশ্রুসিক্ত নয়নে আবেগাপ্লুত হয়ে কথা বলতে পারছিলেন না তিনি। কান্নায় ভেঙে পড়েন।
এদিন ১৮ মিনিটের বক্তব্যের শুরুতেই তামিম বলেন, ‘গতকাল আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটিই আমার শেষ আন্তর্জাতিক খেলা। আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে এই মুহূর্তে অবসরের ঘোষণা দিলাম। এই সিদ্ধান্তটি আমি হুট করে নেইনি। আমি গত কয়েকদিন থেকে এটা ভাবছিলাম। আমি আমি পরিবারের সঙ্গেও কথা বলেছি। আমি মনে করি এটাই সঠিক সময় সিদ্ধান্ত নেওয়ার।’
মাসখানেক ধরেই কোমরের চোটে ভুগছিলেন ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল। যে কারণে সর্বশেষ আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট ম্যাচটিও খেলতে পারেননি টাইগার এই ওপেনার। এরপর শঙ্কা জেগেছিল ওয়ানডে সিরিজে খেলা নিয়েও। নিয়মিত অনুশীলন চালিয়েও শতভাগ ফিট হয়ে উঠতে পারেননি তামিম। তবে আফগানদের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডের আগে সংবাদ সম্মেলনে তামিম জানিয়ে দেন শতভাগ ফিট না হলেও প্রথম ওয়ানডে খেলবেন তিনি। শেষমেশ খেলেছেনও।
তামিমের এমন সিদ্ধান্তে কিছুটা রাগান্বিত হন বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। দেশের একটি সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলছিলেন, ‘এটি তো আর পাড়া-মহল্লার কোনো ম্যাচ নয়, আন্তর্জাতিক একটা ম্যাচ। এমন সিরিজের আগের দিন অধিনায়ক বলছে সে ফিট না। কিন্তু খেলবে। খেলে নিজের ফিটনেস বোঝার চেষ্টা করবে। এটা তো পেশাদার কোনো আচরণ হতে পারে না।
বিসিবি সভাপতির এমন মন্তব্যের পরপরই মূলত অবসরের ঘোষণাটা দিলেন তামিম। এর আগে ২০২২ সালের ১৬ জুলাই হঠাৎই সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘোষণা দিয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন তামিম। এবারো অনেকটা হুট করেই বিদায়ের কথা জানালেন।
ওয়ানডে দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় তামিমের। ২০০৭ সালে কেনিয়ার বিপক্ষে দেশের হয়ে প্রথম ম্যাচ খেলেছিলেন।
২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নাম লেখান তামিম। এর মাঝে কেটে গেছে প্রায় ১৬ বছর। এর মধ্যে ওয়ানডেতে খেলেছেন ২৪১টি ম্যাচ। ৩৬.৬২ গড়ে রান করেছেন ৮ হাজার ৩১৩। পাশাপাশি টেস্টে ৭০ ম্যাচে ৩৮.৮৯ গড়ে করেছেন ৫ হাজার ১৩৪ রান। আর ৭৮ টি টোয়েন্টি খেলে ২৪.০৮ গড়ে ১ হাজার ৭৫৮ রান করে গত বছর অবসর নেন তিনি।