সংবাদ প্রকাশের জেরে আরটিভির নিজস্ব প্রতিবেদক অধরা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)।
মঙ্গলবার (১১ জুলাই) ডিইউজের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন এক বিবৃতিতে বলেন, রাষ্ট্রের স্পর্শকাতর বিষয়ের সুরক্ষায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হলেও তার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছেন সাংবাদিকরা। ‘উদোর পিণ্ডি বুদোর ঘাড়ে’ চাপানোর মতো সাংবাদিকদের হয়রানি করা হচ্ছে।বিবৃতিতে বলা হয়, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিকদের নিবর্তনমূলক ধারা বাতিলের দাবিতে বরাবরই অনঢ় অবস্থান জানিয়ে আসছে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন। তার পরিপ্রেক্ষিতে আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের নিরাপত্তার বিষয়ে একাধিকবার প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে তার প্রতিফলন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। উল্টো সাংবাদিকরা নানাভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন অবিলম্বে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এই ধরনের হয়রানিমূলক তৎপরতা বন্ধের পাশাপাশি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে থাকা সাংবাদিক নিবর্তনের ধারাগুলো বাতিলের জোর দাবি জানাচ্ছে।
সোহেল হায়দার চৌধুরী ও আকতার হোসেন আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রশ্নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তখন সরকারের বিভিন্ন মহলে ঘাপটি মেরে থাকা একটি অসাধু চক্র নিজেদের দুর্নীতি-অনিয়ম-অপরাধ আড়াল করতে সাংবাদিকদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে। এই চক্রের কর্মকাণ্ড সরকারের স্বাধীন সংবাদমাধ্যম নীতিকে যেমন প্রশ্নবিদ্ধ করছে, তেমনি সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকদের সঙ্গে সরকারের দূরত্ব তৈরি করছে। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বা অন্য কোনোভাবে সাংবাদিক হয়রানির যে কোনো পদক্ষেপ মোকাবিলায় ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন সবসময় আপসহীন। সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষায় প্রয়োজনে রাজপথে সংগ্রাম করে আসছে এবং তা অব্যাহত থাকবে।
রাজধানীর রাজারবাগের পির সিন্ডিকেটের অপকর্মের সংবাদ প্রকাশ করায় আরটিভির নিজস্ব প্রতিবেদক অধরা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। চট্টগ্রামের সাইবার ট্রাইব্যুনালে চলতি বছরের ১৩ মে মামলাটি করেন পির সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা শাকেরুল কবির।
মামলার দায়িত্বপ্রাপ্ত তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম সোমবার (১০ জুলাই) আরটিভিতে চিঠি দেওয়ার পর বিষয়টি জানাজানি হয়। অধরা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এর ২৪, ২৫ ও ২৯ ধারায় মামলাটি করা হয়।