‘এশিয়ান গার্লস ইন এ্যাকশন’ প্রজেক্টের প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করতে তাইওয়ান যাচ্ছে বগুড়ার ব্র্যাক প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী মোছাঃ তাসমিয়া ইসলাম। বগুড়ার আটাপাড়া এলাকার স্বর্ণশিল্পী মোঃ তরিকুল ইসলামের মেয়ে। জানা গেছে, আগামী (১৬ জুলাই) রোববার ‘এশিয়ান গার্লস ইন এ্যাকশন’ প্রজেক্টের প্রতিযোগিতা তাইওয়ানে অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণের জন্য এশিয়ার ১৫ টি দেশের ৮০ জন শিক্ষার্থী আবেদন করে। বাছাই পর্ব শেষে ৮টি দেশের ৮জন প্রতিযোগির মধ্যে ৩জনকে চুড়ান্ত প্রতিযোগিতার জন্য বাছাই করা হবে। এতে অংশগ্রহণ করছে, বাংলাদেশের মোছাঃ তাসমিয়া ইসলাম, আফগানিস্তানের নার্গিস রাসিউলি, উজবেকিস্তানের আইনুরা এরেজাপবেভা, ইন্দোনেশিয়ার কুইন আজালিয়া রহমাওয়াতি, তাইওয়ানের ইউ সিয়াও, মালেশিয়ার কারেশনি প্রিয়াদেব, ফিলিপাইনের সিই জাই সুরেতা এবং ভারতের অঞ্জলি হারিয়ানা। ‘এশিয়ান গার্লস ইন এ্যাকশন’ তাদের ওয়েব সাইটে লিখেছেন, এই বছর সমস্ত আবেদনকারীদের ধন্যবাদ জানানো হয়েছে। তারা ১৫ টি দেশ থেকে ৮০ টিরও বেশি আবেদন পেয়েছে। তাদের এই বাছাই প্রক্রিয়া কঠিন ছিল। বাছাই বৈঠকের পর, তারা এই বছরের আটজন অংশগ্রহণকারীর নাম ঘোষণা করেছে।
প্রতিযোগীতায় প্রজেক্টের তথ্যমতে, প্রথমে প্লাস্টিককে একটি চেম্বারে পোঁড়ানো হবে। প্লাস্টিককে পুড়লে তাপ, কার্বন-ডাই-অক্সাইড ও কার্বন-মনো-অক্সাইড উৎপন্ন হবে। কার্বন-ডাই-অক্সাইড ও কার্বন-মনো-অক্সাইডকে পরিবেশে উম্মুক্ত না করে একটি চেম্বারে সংরক্ষণ করা হবে। উৎপন্ন তাপ দিয়ে বিদ্যুৎ তৈরি (থার্মাল পাওয়ারপ্লান্ট) করা হবে। কার্বন-ডাই-অক্সাইডকে কার্বন-মনো-অক্সাইড থেকে পৃথকীকরণ করে আলাদা দুটি চেম্বারে নেওয়া হবে। বাসাবাড়ি ও কল-কারখানার নোংরা পানি জলাশয় ও নদীতে না ফেলে তা একটি চেম্বারে জমা করা হবে এবং রিসাইকেল করে বিশুদ্ধ পানি তৈরী করা হবে। সোলার প্যানেল থেকে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে তা দিয়ে বিশুদ্ধ পানিকে তড়িত বিশ্লেষণের মাধ্যমে হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন গ্যাস উৎপন করা হবে। উৎপন্ন হাইড্রোজেনের সাথে কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাসের বিক্রিয়ায় মিথেন তৈরি হবে। বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিযোগি বগুড়ার ব্র্যাক প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মোছাঃ তাসমিয়া ইসলাম ‘উত্তর অঞ্চলের খবর’কে জানায়, আমি বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিযোগি হিসেবে আনন্দিত। সেই সাথে আমি সকলের কাছে দোয়া চাই, যেন আমি আটজনের মধ্যে অংশগ্রহণ করে চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় ১ম থেকে ৩য় স্থানের মধ্যে থাকতে পারি এবং দেশের জন্য কাজ করে যেতে পারি। আমার প্রতিযোগিতার বিষয় হচ্ছে অব্যবহৃত বা ফেলে দেয়া প্লাস্টিক পুড়িয়ে বিদ্যুৎ তৈরি করা। পড়াশোনার শুরু থেকেই আমার মা আমার অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। প্রতিযোগিতার শুরু থেকে আমাকে সহযোগিতা করেছেন আমাদের বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকসহ সকল শিক্ষিক-শিক্ষিকাবৃন্দ। এ বিষয়ে বগুড়ার ব্র্যাক প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘তাসমিয়া একজন মেধাবী শিক্ষার্থী। সে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে আগামী ১৬ তারিখে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবে। বিষয়টি অনেক গর্বের এবং আনন্দের। সে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিযোগি। তাসমিয়ার সাফল্য আমাদের দেশের সাফল্য হিসেবে কাজ করবে। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি’’।