শরীরের যেসকল অংশ সব সময় চাপা থাকে,সহজে বাতাস প্রবেশ করতে পারে না, সেসব স্থানে জমে থাকা ঘাম না শুকিয়ে ফাঙ্গাল ইনফেকশন হয়ে থাকে।অনেক সময় ত্বকে কাটা কাটা ভাব কিংবা ত্বকের ফুসকুড়ি দেখা যায়।এর থেকে চুলকানি, লালভাব, ফোলাভাব সৃষ্টি হয়।এমনকি এর থেকে জ্বলুনি অনুভূত হয়।
বিশেষ করে শরীরের বিভিন্ন ভাঁজ যেমন: বগল, ঊরু ও নিম্নপেটের সংযোগস্থল,দুই নিতম্বের মধ্যভাগ,নারীদের স্তনের নিচের অংশে এই সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে।
এসব অংশ তুলনামূলক ঘর্মাক্ত ও ভিজা থাকার কারণে খুব সহজেই ছত্রাক আক্রমণ করে।
আমাদের দেশের উষ্ণ, আর্দ্র আবহাওয়া ফাঙ্গাসের বংশবৃদ্ধির জন্য সর্বাধিক উপযোগী। তাই গরমকালে ফাঙ্গাল ইনফেকশনের উপদ্রব বেড়ে যায়।
নিরাময়ে করণীয়সমূহ
>ডাক্তারের পরামর্শে ওষুধ কিংবা ক্রিম লাগাতে হবে তবে স্টেরয়েড যুক্ত ক্রিম এড়িয়ে চলুন উত্তম।
>অ্যান্টি ফাঙ্গাল সাবান এবং পাউডার ব্যবহার করতে হবে।
>অন্যের তোয়ালে, পোশাক ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
>যাদের পা ঘামার প্রবণতা বেশি তারা সম্ভব হলে আবদ্ধ জুতা কম পরবেন। আবদ্ধ জুতা পরলে পা ঘামে এবং তা থেকে দূর্গন্ধ সৃষ্টি হয় ও ফাঙ্গাস আক্রমণ করে। জুতা-মোজা পরিষ্কার ও শুষ্ক রাখার চেষ্টা করতে হবে। অতিরিক্ত পা ঘামলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
>বিছানার চাদর নিয়মিত স্টেরিলাইজ করা।
>টাইট জামাকাপড় বা ঘামে ভেজা জামা বেশিক্ষণ পড়বেন না।সুতির পোশাক পরুন।
>বেশি পরিমাণে সেন্ট, পারফিউম এগুলো ব্যবহার পরিহার করুন।
>রসুন ইনফেকশনের বিরুদ্ধে ভালো কাজ করে।সামান্য রসুন হালকা থেঁতো করে দুই চামচ সরিষার তেলে গরম করে আক্রান্ত স্থানে লাগালে বা এমনি খেলে ত্বকের সমস্যা থেকে পরিত্রান পাওয়া যায়।
>দই ত্বকের যেকোন ধরনের ক্ষত ও ফাঙ্গাল ইনফেকশন দূর করতে সবচেয়ে কার্যকরী ঘরোয়া উপাদান। এতে থাকা লেকটিক এসিড জীবাণুর বিরুদ্ধে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল হিসেবে কাজ করে।হাতে তৈরি খাঁটি দই আক্রান্ত স্থানে লাগালে বা খেলে ত্বকের সমস্যা দূরীভূত হয়।
>খাঁটি নারিকেল তেলে থাকা তিন ধরনের ফ্যাটি এসিড:ক্যাপ্রিক এসিড,ক্যাপ্রোলিক এসিড ও লরিক এসিড যা অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপাদান হিসেবে কাজ করে।আক্রান্ত স্থানে তেলের প্রলেপ লাগালে ভালো ফল আসবে।
>বেশি তেল মশলা যুক্ত খাবার পরিহার করুন এবং প্যাকেটজাত খাবারও এড়িয়ে চলুন।
>এছাড়া ওবেসিটি বা মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মেদ ফাঙ্গাল ইনফেকশনের অন্যতম প্রধান কারণ। কেননা, যাঁদের অতিরিক্ত ওজন তারা প্রচুর ঘামে এবং ঘাম থেকেই ছড়াতে পারে এই রোগ।তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন।