ঢাকা ০৫:০১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৩০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ক্যান্সার সচেতনতায় রেনাটা লিমিটেড

মরণঘাতী ক্যান্সার রোগীদের মানসিক সহায়তা দেওয়ার জন্য দেশের অন্যতম ঔষধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান রেনাটা লিমিটেড গত শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) মিরপুরের রেনাটা কার্যালয়ে একটি ব্যাতিক্রমধর্মী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। সাইকোলজিকাল হেলথ অ্যান্ড ওয়েলনেস ক্লিনিকের (PHWC) সহযোগিতায় ৪৫টি ক্যান্সার আক্রান্ত পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এ আয়োজনটি অনুষ্ঠিত হয়। আহসানিয়া মিশন ক্যান্সার হাসপাতালের মেডিক্যাল অনকোলজি বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা. আবুল আহসান দিদার এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে বলা হয়, ক্যান্সার একবিংশ শতাব্দীর অন্যতম একটি উদ্বেগের বিষয়। এই রোগ শুধু শারীরিক অসুস্থতাই নয় বরং প্রচণ্ড মানসিক যন্ত্রণারও ব্যাপার। এই রোগে শারীরিক চিকিৎসার পাশাপাশি মানসিক সহযোগিতারও দরকার হয়। এক গবেষণায় দেখা গেছে, ক্যান্সারের চিকিৎসার সময় যে রোগী পাশাপাশি মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সহাযোগিতা নিচ্ছে তার ক্ষেত্রে ঔষধ বেশি কাজ করছে। সে দ্রুত সুস্থ হচ্ছে। তাই ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে শরীরের পাশাপাশি তাঁদের মানসিক স্বাস্থের দিকেও পরিবারের সমান নজর রাখা উচিত বলে বিশেষজ্ঞরা বারবার জোর দিচ্ছেন।

ডা. আবুল আহসান দিদার বলেন, বর্তমানে সারা পৃথিবীতে ক্যান্সারের একই রকম চিকিৎসা করা হয়। তাই রোগী ও রোগীর পরিবারকে ভয় না পেয়ে উচিত সবাই মিলে এই রোগকে মোকাবিলা করা। ওষুধের পাশাপাশি মানসিকভাবে সহযোগিতা পেলে ক্যান্সার রোগীর দ্রুত উন্নতি সম্ভব। মানুষ হিসেবে মানুষের দায়িত্ব হচ্ছে মানুষের ভালো করা, ভালো পরামর্শ দেওয়া।

সেমিনারে সাইকোলজিকাল হেলথ অ্যান্ড ওয়েলনেস ক্লিনিকের (PHWC) সিনিয়র মনোরোগ কাউন্সিলর শাহিনা আক্তার ক্যান্সার রোগীদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে বিশদ আলোচনা করেন। তিনি সেখানে উপস্থিত রোগীদের সঙ্গে কথা বলেন। যেকোনো রোগে, বিশেষ করে ক্যান্সারের মতো রোগে মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি বিশেষভাবে যত্নবান হওয়ার তাগিদ দেন তিনি।

২০১৩ সালের এক গবেষণায় পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রায় ১৩ থেকে ১৫ লাখ ক্যান্সার রোগী আছে। প্রতি বছর আরও দুই লাখ করে নতুন রোগী এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এই রোগের ফলে ৪ থেকে ২৪ শতাংশ মানুষ হতাশায় ভুগছে।

অনুষ্ঠানে আহসানিয়া মিশন ক্যান্সার হাসপাতালের আরও দুইজন ক্যান্সার চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন। তারা হলেন ডা. জান্নাতুল ফেরদাউস ও ডা. রুবামা করিম।

ডা. জান্নাতুল ফেরদাউস বলেন, ক্যান্সার রোগের শুরুতে শারীরিক অশান্তির চেয়ে মানসিক দুশ্চিন্তা প্রধান সমস্যা হয়ে দেখা দেয়। অনেক সময় রোগীর সাথে তার দেখাশোনা করার মানুষটিও দুশ্চিন্তায় ভেঙে পরে। তিনি বলেন, রোগীকে অবশ্যই মানসিকভাবে শক্ত রাখতে হবে। প্রয়োজন হলে রোগীর সাথে রোগীর দেখাশোনা করার মানুষটিকেও মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

ডা. রুবামা করিম বলেন, ক্যান্সার শব্দটি শুনতে ছোট হলেও এর চিকিৎসায় সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানের শেষে বক্তব্য দেন রেনাটা লিমিটেডের চিফ মার্কেটিং অফিসার তানবীর সাজিব। তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানান। এই ধরনের রোগে তিনি আরও বেশি সচেতনতামূলক সেমিনারের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ক্যান্সার যুদ্ধে আমাদের সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।

সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন রেনাটা লিমিটেডের অনকোলজি বিভাগের টিম লিডার আমির আব্দুল্লাহ। অনুষ্ঠানে ডাক্তার এবং ক্যান্সার রোগীদের সাথে তাদের পরিবারের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ক্যান্সার সচেতনতায় রেনাটা লিমিটেড

আপডেট সময় : ০৩:১০:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

মরণঘাতী ক্যান্সার রোগীদের মানসিক সহায়তা দেওয়ার জন্য দেশের অন্যতম ঔষধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান রেনাটা লিমিটেড গত শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) মিরপুরের রেনাটা কার্যালয়ে একটি ব্যাতিক্রমধর্মী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। সাইকোলজিকাল হেলথ অ্যান্ড ওয়েলনেস ক্লিনিকের (PHWC) সহযোগিতায় ৪৫টি ক্যান্সার আক্রান্ত পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এ আয়োজনটি অনুষ্ঠিত হয়। আহসানিয়া মিশন ক্যান্সার হাসপাতালের মেডিক্যাল অনকোলজি বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা. আবুল আহসান দিদার এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে বলা হয়, ক্যান্সার একবিংশ শতাব্দীর অন্যতম একটি উদ্বেগের বিষয়। এই রোগ শুধু শারীরিক অসুস্থতাই নয় বরং প্রচণ্ড মানসিক যন্ত্রণারও ব্যাপার। এই রোগে শারীরিক চিকিৎসার পাশাপাশি মানসিক সহযোগিতারও দরকার হয়। এক গবেষণায় দেখা গেছে, ক্যান্সারের চিকিৎসার সময় যে রোগী পাশাপাশি মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সহাযোগিতা নিচ্ছে তার ক্ষেত্রে ঔষধ বেশি কাজ করছে। সে দ্রুত সুস্থ হচ্ছে। তাই ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে শরীরের পাশাপাশি তাঁদের মানসিক স্বাস্থের দিকেও পরিবারের সমান নজর রাখা উচিত বলে বিশেষজ্ঞরা বারবার জোর দিচ্ছেন।

ডা. আবুল আহসান দিদার বলেন, বর্তমানে সারা পৃথিবীতে ক্যান্সারের একই রকম চিকিৎসা করা হয়। তাই রোগী ও রোগীর পরিবারকে ভয় না পেয়ে উচিত সবাই মিলে এই রোগকে মোকাবিলা করা। ওষুধের পাশাপাশি মানসিকভাবে সহযোগিতা পেলে ক্যান্সার রোগীর দ্রুত উন্নতি সম্ভব। মানুষ হিসেবে মানুষের দায়িত্ব হচ্ছে মানুষের ভালো করা, ভালো পরামর্শ দেওয়া।

সেমিনারে সাইকোলজিকাল হেলথ অ্যান্ড ওয়েলনেস ক্লিনিকের (PHWC) সিনিয়র মনোরোগ কাউন্সিলর শাহিনা আক্তার ক্যান্সার রোগীদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে বিশদ আলোচনা করেন। তিনি সেখানে উপস্থিত রোগীদের সঙ্গে কথা বলেন। যেকোনো রোগে, বিশেষ করে ক্যান্সারের মতো রোগে মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি বিশেষভাবে যত্নবান হওয়ার তাগিদ দেন তিনি।

২০১৩ সালের এক গবেষণায় পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রায় ১৩ থেকে ১৫ লাখ ক্যান্সার রোগী আছে। প্রতি বছর আরও দুই লাখ করে নতুন রোগী এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এই রোগের ফলে ৪ থেকে ২৪ শতাংশ মানুষ হতাশায় ভুগছে।

অনুষ্ঠানে আহসানিয়া মিশন ক্যান্সার হাসপাতালের আরও দুইজন ক্যান্সার চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন। তারা হলেন ডা. জান্নাতুল ফেরদাউস ও ডা. রুবামা করিম।

ডা. জান্নাতুল ফেরদাউস বলেন, ক্যান্সার রোগের শুরুতে শারীরিক অশান্তির চেয়ে মানসিক দুশ্চিন্তা প্রধান সমস্যা হয়ে দেখা দেয়। অনেক সময় রোগীর সাথে তার দেখাশোনা করার মানুষটিও দুশ্চিন্তায় ভেঙে পরে। তিনি বলেন, রোগীকে অবশ্যই মানসিকভাবে শক্ত রাখতে হবে। প্রয়োজন হলে রোগীর সাথে রোগীর দেখাশোনা করার মানুষটিকেও মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

ডা. রুবামা করিম বলেন, ক্যান্সার শব্দটি শুনতে ছোট হলেও এর চিকিৎসায় সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানের শেষে বক্তব্য দেন রেনাটা লিমিটেডের চিফ মার্কেটিং অফিসার তানবীর সাজিব। তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানান। এই ধরনের রোগে তিনি আরও বেশি সচেতনতামূলক সেমিনারের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ক্যান্সার যুদ্ধে আমাদের সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।

সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন রেনাটা লিমিটেডের অনকোলজি বিভাগের টিম লিডার আমির আব্দুল্লাহ। অনুষ্ঠানে ডাক্তার এবং ক্যান্সার রোগীদের সাথে তাদের পরিবারের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।