‘দোষ না করেও শাস্তি পেলাম’ ড. ইউনুস

শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ও নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ছয় মাসের কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। এসময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘দোষ না করেও শাস্তি পেলাম’ ।

তিনি সহ আরও চারজনকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এর সাথে  প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে। দণ্ড প্রাপ্ত অপর তিনজন হলেন গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক  আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুর জাহান বেগম ও মো. শাহজাহান।

সোমবার বেলা দুইটার পর এই রায় ঘোষণা করেন ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানা। শ্রম আইন লঙ্ঘনের জন্য ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনা হয়। কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর রাস্ট্র পক্ষের বাদী হয়ে এই মামলাটি দায়ের করে।  ২২ আগস্ট ২০২৩ এ শ্রম আদালতে এই মামলার প্রথম সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়, চলমান এই মামলা সাক্ষ্য প্রমান শেষ হয় গত ৯ নভেম্বর। এতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের চার কর্মকর্তা সাক্ষ্য দেন। গত ২৪ ডিসেম্বর রায় ঘোষণার জন্য  ১ জানুয়ারি ধার্য করেছিলেন আদালত।

মামলায় অভিযোগ আনা হয় যে শ্রম আইন, ২০০৬ এবং বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা, ২০১৫ অনুযায়ী, গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক বা কর্মচারীদের শিক্ষানবিশকাল পার হলেও তাঁদের নিয়োগ স্থায়ী করা হয়নি। প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিক বা কর্মচারীদের মজুরিসহ বার্ষিক ছুটি দেওয়া, ছুটি নগদায়ন ও ছুটির বিপরীতে নগদ অর্থ দেওয়া হয় না।

এ মামলায় আরও অভিযোগ আনা হয় শ্রম আইন অনুযায়ী গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক অংশগ্রহণ তহবিল ও কল্যাণ তহবিল গঠন করা হয়নি এবং লভ্যাংশের ৫ শতাংশের সমপরিমাণ অর্থ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন আইন অনুযায়ী গঠিত তহবিলে জমা দেওয়া হয় না।

অভিযোগের জবাবে আত্মপক্ষ সমর্থন করে ৯ নভেম্বর ড. ইউনূসসহ চারজন বিবাদী লিখিতভাবে আদালতকে জানায়, গ্রামীণ টেলিকমের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয় নিজস্ব নীতিমালা অনুযায়ী। কারণ, গ্রামীণ টেলিকম যেসব ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করে, সেগুলো চুক্তিভিত্তিক। তবে গ্রামীণ টেলিকমের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে স্থায়ী কর্মীর মতো ভবিষ্য তহবিল, আনুতোষিক, অর্জিত ছুটি ও অবসরকালীন ছুটি দেওয়া হয়ে থাকে।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়েছিল, গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানি আইনের ২৮ ধারা অনুযায়ী একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। এর লভ্যাংশ বিতরণযোগ্য নয়, সামাজিক উন্নয়নে ব্যয় করা হয়।

তবে রায় ঘোষণার পাঁচ মিনিটের মধ্যেই আসামিদের জামিন দেন আদালত। আপিল সাপেক্ষে তাদের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন শ্রম আদালতের বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানা।

ট্যাগস :

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

‘দোষ না করেও শাস্তি পেলাম’ ড. ইউনুস

আপডেট সময় : ০৪:৩৪:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ জানুয়ারী ২০২৪

শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ও নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ছয় মাসের কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। এসময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘দোষ না করেও শাস্তি পেলাম’ ।

তিনি সহ আরও চারজনকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এর সাথে  প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে। দণ্ড প্রাপ্ত অপর তিনজন হলেন গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক  আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুর জাহান বেগম ও মো. শাহজাহান।

সোমবার বেলা দুইটার পর এই রায় ঘোষণা করেন ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানা। শ্রম আইন লঙ্ঘনের জন্য ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনা হয়। কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর রাস্ট্র পক্ষের বাদী হয়ে এই মামলাটি দায়ের করে।  ২২ আগস্ট ২০২৩ এ শ্রম আদালতে এই মামলার প্রথম সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়, চলমান এই মামলা সাক্ষ্য প্রমান শেষ হয় গত ৯ নভেম্বর। এতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের চার কর্মকর্তা সাক্ষ্য দেন। গত ২৪ ডিসেম্বর রায় ঘোষণার জন্য  ১ জানুয়ারি ধার্য করেছিলেন আদালত।

মামলায় অভিযোগ আনা হয় যে শ্রম আইন, ২০০৬ এবং বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা, ২০১৫ অনুযায়ী, গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক বা কর্মচারীদের শিক্ষানবিশকাল পার হলেও তাঁদের নিয়োগ স্থায়ী করা হয়নি। প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিক বা কর্মচারীদের মজুরিসহ বার্ষিক ছুটি দেওয়া, ছুটি নগদায়ন ও ছুটির বিপরীতে নগদ অর্থ দেওয়া হয় না।

এ মামলায় আরও অভিযোগ আনা হয় শ্রম আইন অনুযায়ী গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক অংশগ্রহণ তহবিল ও কল্যাণ তহবিল গঠন করা হয়নি এবং লভ্যাংশের ৫ শতাংশের সমপরিমাণ অর্থ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন আইন অনুযায়ী গঠিত তহবিলে জমা দেওয়া হয় না।

অভিযোগের জবাবে আত্মপক্ষ সমর্থন করে ৯ নভেম্বর ড. ইউনূসসহ চারজন বিবাদী লিখিতভাবে আদালতকে জানায়, গ্রামীণ টেলিকমের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয় নিজস্ব নীতিমালা অনুযায়ী। কারণ, গ্রামীণ টেলিকম যেসব ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করে, সেগুলো চুক্তিভিত্তিক। তবে গ্রামীণ টেলিকমের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে স্থায়ী কর্মীর মতো ভবিষ্য তহবিল, আনুতোষিক, অর্জিত ছুটি ও অবসরকালীন ছুটি দেওয়া হয়ে থাকে।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়েছিল, গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানি আইনের ২৮ ধারা অনুযায়ী একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। এর লভ্যাংশ বিতরণযোগ্য নয়, সামাজিক উন্নয়নে ব্যয় করা হয়।

তবে রায় ঘোষণার পাঁচ মিনিটের মধ্যেই আসামিদের জামিন দেন আদালত। আপিল সাপেক্ষে তাদের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন শ্রম আদালতের বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানা।